বিশেষ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ৪নং দৌলতপুর ও ৩নংতাহেরহুদা ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসৃজন প্রকল্পের (৪০ দিনের কর্মসূচিতে) প্রথম দিনেই নয় ছয়। শনিবার ও রবিবার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সরেজমিনে দেখা গেছে, অন্যান্য ইউনিয়নে কাজ শুরু করা হলেও একেবারেই কাজ করানো হয়নি দুটি ইউনিয়নে। এরা হলেন, দৌলতপুর ও তাহেরহুদা ইউনিয়ন। দ্বিতীয় দিনেও প্রায় একই অবস্থা। এব্যাপারে স্থানীয়রা জানিয়েছেন,প্রকৃত শ্রমিকদের নাম না দিয়ে চেয়ারম্যানদের পছন্দোর শ্রমিকদের নাম দেওয়ায় তাঁরা কাজ করছে না। এছাড়াও তাঁরা জানিয়েছেন,শ্রমিকদের মজুরির টাকা আসবে নিজ নিজ মোবাইল সীমকার্ড ব্যাংকিং একাউন্টে কিন্তু সে সীমকার্ড শ্রমিকদের কাছ থেকে নিয়ে রেখে দেওয়ার ভয়ে তাঁরা কাজে যোগ দেয়নি। শ্রমিকরা বলছেন কাজ করে লাভ কি যদি টাকা নিয়ে নয় ছয় হয়। আমাদেরকে কাজে নাম লিখাতে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে যে কয় দিন কাজ করবো সে কয় দিনের টাকা পাবো। অথচ আমরা ৪০ দিনই কাজ করতে চাই। কিন্তু আমাদের দিয়ে মাঝে মাঝে কাজ করাবেন। তাঁতে অনেকেই রাজি হয়নি বলে কাজে যোগ দিচ্ছেন না। আবার আমাদের সিম কার্ড জমা দিতে বলছেন। আমরা কি করবো।আবার সাংবাদিকদের কাছে বললে নাম কেটে দেবেন বলেও ভুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বরের বিরুদ্ধে।
উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নে শুরুতেই কর্মসূচির কাজ নিঃসন্দেহে ভালো মানের হচ্ছে, কিন্তু যে শ্রমিকগুলো কাজ করছে তাদের কপাল পুড়িয়ে দিচ্ছেন এই সকল শ্রমিকদের ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান-মেম্বর।
শ্রমিকদের টাকা যাতে নয়-ছয় না হয় এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে তাদের মজুরির অর্থ প্রদান করা হচ্ছে তাদের নামে নিবন্ধিত মোবাইল ব্যাংকি একাউন্টের মাধ্যমে, কিন্তু সরকার ভালো ভালো উদ্যোগ নিয়ে কি করবে, কিছু জনপ্রতিনিধিরা তো সরকারের নেওয়া সময় উপযোগী পদক্ষেপ গুলোর সঠিক ব্যবহার করতে চান না। শ্রমিকদের সীমকার্ড জনপ্রতিনিধিদের কাছে আছে কিনা এমন অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সংবাদকর্মীরা যান, ৪নং দৌলতপুর ইউনিয়নে চলমান কর্মসূচিতে। সেসময় তাঁরা উল্লেখিত বিষয় গুলো জানান, উপজেলা ৩ নং তাহেরহুদা ইউনিয়ন ও ৪নং দৌলতপুর ইউনিয়ন প্রথম দিনে একেবারেই কাজ করানো হয়নি। দ্বিতীয় দিনেও প্রায় একই অবস্থা। এখানে দৌলতপুর ইউনিয়নের দখলপুর বকুল ডাক্তারের বাড়ির হতে মসজিদ গামি রাস্তায় কাজে ৭৯ জন শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ২২ জন শ্রমিক পাওয়া গেছে। দলীয় সদ্দার ফুলছদ্দি জানান, আজ ২২ জন শ্রমিক কাজ করছেন গুনে নিন। অথচ এখানে ৭৯ জন শ্রমিকের উপস্থিত থাকার কথা।
ইউনিয়নের হিংগারপাড়া জামে মসজিদ হতে মেঠো রাস্তায় কাজেও একই চিত্র পাওয়া গেছে।
এব্যাপারে ৪নং দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, মাঠে কর্তনের কাজ চলমান। সে জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। যে কয়জন পাওয়া যাচ্ছে সে কয়জন নিয়েই কাজ আরাম্ভ করেছি। আর প্রথম দিনে আমরা জানতে পারি নি প্রকল্প কর্মকর্তা জানান নি,সে জন্য কাজ শুরু করতে পারি নাই।
খাতা পত্র সাইনবোর্ড আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ঠিক করা হবে।
একই বক্তব্য ৩নং তাহেরহুদা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জনাব মুনজুর রাশেদ এর।
এব্যাপারে পিআইও মফিজুর রহমান মোবাইল ফোনে জানান, সবাইকে এক সপ্তাহ পূর্বেই জানিয়েছি। না জানারে অন্যান্য ইউনিয়নে কিভাবে কাজ শুরু করেছে। আপনারা নিয়মিত কাজ পরিদর্শন করুন কোন অনিয়ম হলে আমাদের জানান। তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুস্মিত সাহা জানান,আমি কাজ শুরু হওয়ার প্রথমদিনেই ১নং ভাইনা ইউনিয়নে পরিদর্শন করেছি সেখানে ভালো কাজ হচ্ছে। পর্যায়ক্রমের সকল কাজ পরিদর্শন করা হবে।
Leave a Reply